নিজেদের জমি না থাকায় পু'লিশে চাকরি হলো না আসপিয়ার

বরিশালে পু'লিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগে সব ধাপে উর্ত্তীণ হওয়ার পরেও চাকরি পেলেন না আছপিয়া ইস'লাম কাজল নামে এক তরুণী। চাকরি না পাওয়ার খবর পেয়ে ডিআইজি এসএম আকতারুজ্জামানের কার্যালয়ে ছুটে যান আসপিয়া। সব ধাপে উত্তীর্ণ হওয়ার পরও কেন তার চাকরি হবে না জানতে চাইলে ডিআইজি তাকে জানান, নিজেদের জমি না থাকলে চাকরি দেওয়ার আইন নেই। এরপর ভাঙা মন নিয়ে বুধবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত পু'লিশ লাইনের সামনে বসে থাকেন আসপিয়া।

জানা গেছে, সরকারি হিজলা ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০২০ সালে এইচএসসি পাস করেছেন আসপিয়া ইস'লাম। ১৫ বছর ধরে উপজে'লার খু'ন্না-গোবিন্দপুর গ্রামের একজনের জমিতে আশ্রিত হিসেবে থাকছে তার পরিবার। বাবা সফিকুল ইস'লাম মা'রা গেছেন। পরিবারে মা, তিন বোন ও এক ভাই। ভাই পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তার আয় দিয়েই চলে সংসার।

আসপিয়া জানান, বরিশাল জে'লায় পু'লিশ কনস্টেবলের শূন্য পদে লোক নিতে সেপ্টেম্বরে বি'জ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। অনলাইনে আবেদন করলে গত ১৪, ১৫ ও ১৬ নভেম্বর জে'লা পু'লিশ লাইনে শারীরিক যোগ্যতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৭ নভেম্বর লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। ২৩ নভেম্বর প্রকাশিত লিখিত পরীক্ষার ফলাফলেও উত্তীর্ণ হন। ২৪ নভেম্বর একই স্থানে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধা তালিকায় পঞ্চ'ম হন আসপিয়া। ২৬ নভেম্বর জে'লা পু'লিশ লাইনে চিকিৎসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। এতেও উত্তীর্ণ হন। সবশেষ ২৯ নভেম্বর মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ঢাকার রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পু'লিশ লাইন হাসপাতা'লে চূড়ান্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। সেখানেও উতরে যান আসপিয়া।

চূড়ান্ত নিয়োগের আগে জে'লা পু'লিশের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আসপিয়া ও তার পরিবারকে ‘ভূমিহীন’ উল্লেখ করা হয়। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) জে'লা পু'লিশ সুপার বরাবর প্রতিবেদন জমা দেন হিজলা থা'নার উপ-পরিদর্শক মো. আব্বাস। এর আগে ভূমিহীন হওয়ায় (স্থায়ী ঠিকানা না থাকায়) আসপিয়ার চাকরি হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।

আসপিয়া বলেন, ‘আমি যোগ্যতাবলে সাতটি ধাপ পেরিয়ে চূড়ান্ত নিয়োগের অ'পেক্ষায় ছিলাম। এর মধ্যে হিজলা থা'নার ওসি জানান, চাকরি পেতে হলে নিজেদের জমিসহ ঘর দেখাতে হবে। কিন্তু আমাদের কোনও জমি নেই। আম'রা একজনের জমিতে বছরের পর বছর ধরে বাস করছি। জমি নেই বলে আমা'র চাকরি হবে না—এটা বিশ্বা'স হচ্ছিল না। বুধবার দুপুরে ডিআইজি স্যারের কাছে গিয়ে তাকে অনেক অনুনয়-বিনয় করি। কিন্তু আইনে বাধা থাকায় কিছু করার নেই বলে জানান তিনি।’

জে'লা পু'লিশ সুপার মা'রুফ হোসেন বলেন, দেশের কোথাও যদি তাদের ভূমি থাকে তাহলে সেটাই স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে গ্রহণ করা হবে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে বলে জানান তিনি।

জে'লা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও চাকরি না হওয়া দুঃখজনক। ওই মে'য়েটির পরিবারকে হিজলায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে জমিসহ ঘর, তথা একটি স্থায়ী ঠিকানার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।

Back to top button