আইভীর বিপক্ষে ল'ড়বেন বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট তৈমুর
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নগরপ্রধান তথা মেয়র পদে বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সেলিনা হায়াত আইভীর বিপক্ষে ভোটের ময়দানে নামতে যাচ্ছেন হেভিওয়েট প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। তবে বিএনপি থেকে নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে ল'ড়াইয়ে নামছেন বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা। শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তৈমুর আলম খন্দকার নিজেই। সূত্র বলছে— নারায়ণগঞ্জের তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রবল ইচ্ছা ও মনোবল চাঙা রাখতেই আম'রা মৌন সম্মতি দিয়েছি। তাছাড়া বিএনপিপন্থী অনেক কাউন্সিলর প্রার্থীও আছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও চলমান নির্বাচনী পরিবেশ-প্রতিবেশে নাসিকে মেয়র পদে তৈমুর আলম খন্দকার ল'ড়াইয়ে নামলে শুধু বিএনপিই নয়, গণজোয়ার সৃষ্টি হবে বলে মনে করছি আম'রা।
তৈমুর আলম খন্দকার বলেছেন, শনিবার তিনি জে'লা নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করতে পারেন। মেয়র পদে তৈমুর আলম খন্দকার ভোটযু'দ্ধে নামলে একটি চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জানা গেছে, তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নাসিক নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়ে দলটির প্রথমসারির নেতা থেকে তৃণমূল নেতাকর্মী-সম'র্থকরা অনেকটা মুখিয়ে ছিলেন জে'লা বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের দিকেই। দলীয় সিদ্ধান্তের অ'পেক্ষায় থাকলেও স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গদলের শত শত নেতাকর্মী ভিড় জমিয়েছেন তৈমুর খন্দকারের বাড়িতে। শেষতক গত ৫ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি সাখায়াত হোসেন খান ও সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল। যদিও দুজনই বলেছেন, মনোনয়ন ফরম কিনে রাখলেও তারা দুজনই অ'পেক্ষায় আছেন দলীয় সিদ্ধান্তের।
তবে অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার এ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানোয় সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশ উৎফুল্লতা দেখা গেছে। এটিএম কামাল অবশ্য বলছেন- অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার শুধু আমাদের সিনিয়র নেতাই নন, তিনি একজন শক্তিশালী প্রার্থী। দলের বাইরেও তার ক্লিন ব্যক্তি ইমেজ রয়েছে। তিনি নির্বাচন করলে আমি সরে দাঁড়াব।এটিএম কামাল আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে পরিবর্তনের একটি দাবি উঠেছে সাধারণ মানুষের মাঝ থেকেই। সর্বশেষ জে'লার বেশ কয়েকটি ইউপি নির্বাচনে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থীর জয় ঘটেছে। অ্যাডভোকেট তৈমুরের নাম প্রধানমন্ত্রীর কাছে রয়েছে। সে কারণেই দুই দফা তিনি দলীয় বৈঠকে অ্যাডভোকেট তৈমুরের নাম উচ্চারণ করেছেন। অ্যাডভোকেট তৈমুর প্রার্থী হলে ভোট সুষ্ঠু হবে- এমন ধারণাও করছেন অনেক কর্মী-সম'র্থক।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নামছেন জানিয়ে অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার জানিয়েছেন, আমি দলীয় সিদ্ধান্তে অনড় ছিলাম। কিন্তু তফসিল ঘোষণার পর থেকেই দলের ত্যাগী নেতাকর্মী ও সম'র্থকরা যেভাবে আমাকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন- আমি মনে করি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের এ স্পৃহা ও চাঙা ভাবটা ধরে রাখাও আমা'র নৈতিক দায়িত্ব। তাছাড়া নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে মানুষ পরিবর্তন চাচ্ছেন; ১৮ বছরের একনায়কতন্ত্রের অবসান চাচ্ছেন। দলের বাইরেও শত শত মানুষ আমাকে নির্বাচন করতে বলছেন। খালি মাঠে গোল দেওয়ার সুযোগ আম'রা দিতে চাই না। নারায়ণগঞ্জ জে'লা বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতার সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানান, আম'রা মনে করি- চলমান ইউপি নির্বাচন সরকারের জন্য একটি বার্তা ছিল। আম'রা মনে করি, আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনটি সরকার ও বিদায়ী নির্বাচন কমিশনের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। যেহেতু ভোট হবে ইভিএম পদ্ধতিতে, তাই সেখানে কোনো কারসাজি করলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের সম্ভবনাটুকুও নিঃশেষ হয়ে যাবে।