রমজানে বিনামূল্যে খামা'রের দুধ বিতরণ করেন জলিল-রাবেয়া দম্পতি
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজে'লার রতনপুর গ্রামের বাসিন্দা জলিল-রাবেয়া দম্পতি। তারা পুরো রমজান মাসজুড়ে নিজেরা লাভবান না হয়ে এলাকার গরীবদের মাঝে বিনামূল্যে খামা'রে উৎপাদিত গাভীর দুধ বিতরণ করছেন। এই কর্মকা'ণ্ডে জলিল-রাবেয়া দম্পতি এলাকায় বেশ নন্দিত হয়েছেন।
এলাকাবাসী জানান, রমজান মাস এলেই ওই দম্পতি এলাকার গরীব, অসহায়, বিধবা ও বয়স্ক নারী-পুরুষদের বিনামূল্যে তাদের খামা'রের গাভীর দুধ বিতরণ করেন। অর্থের অভাবে যারা ভালো কিছু খেয়ে রোজা রাখতে পারে না রোজার শেষ দিন পর্যন্ত তাদের জন্য এমন কার্যক্রম চালিয়ে যান মানবিক এ দম্পতি।
গ্রামের ষাটোর্ধ্ব বিধবা হামিদা বেওয়া। স্বামী মা'রা গেছে বেশ কয়েক বছর আগে। একমাত্র ছে'লেও বিয়ে করে শ্বশুর বাড়িতে থাকে, মায়ের খোঁজ-খবর রাখে না। ভিক্ষাবৃত্তি করে তিনি সংসার চালান। জলিল-রাবেয়া দম্পতির বাড়ি থেকে আধা লিটারের একটু কম দুধ প্লাসটিকের মগে নিয়ে লা'ঠিতে ভর দিয়ে বাড়ি ফিরছেন আর বিরবির করে কী' যেন বলছেন। দুধ কোথায় পেলেন এমন প্রশ্নের জবাবে হামিদা বেওয়া বলেন, ‘জলিলের বউ দুধগুলা দিছে বাবা। বাজার ঘাট করা পারিনা। এই দুধ দিয়ে ভাত খায়েই রোজা করোছি। আল্লাহ ওরগেরে ভালো করুক।’
একই বয়সের বিধবা মনোয়ারা ছোট জগে দুধ নিচ্ছেন জলিল দম্পতির নিকট থেকে। কত টাকার দুধ নিলেন জানতে চাইলে মনোয়ারা বলেন, ‘হামি দুধ কিনে খামু টেকা পামু কোটে। ওজার পলা দিনতে জলিলের বউ দুধ দ্যাছে টেকা লেয় না। এই দুধ দিয়ে ভাত খায়েই তো ওজা থাকোছো বাবা।’
আব্দুল জলিল বলেন, আমা'র খামা'রে ৫টি বিদেশী জাতের গাভী আছে। এরমধ্যে ২টি গাভীর দুধ হয় না। ২টি মা হতে চলেছে অল্প দুধ হয়, ১টি গাভী দুধ ভালো দেয়। প্রতিদিন গড়ে ২০-২৫ লিটার দুধ হয়। যারা টাকার অভাবে দুধ কিনতে পারেন না রোজার প্রথম দিন থেকে তাদের টাকা ছাড়াই দুধ দিচ্ছি।