আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম কারা আসছে, কারা যাচ্ছে
আওয়ামী লীগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণী সংস্থা হলো দলের প্রেসিডিয়াম। আওয়ামী লীগ সভাপতি হলেন দলের কার্যকরী প্রধান। আর দলের সভাপতির পরপরই প্রেসিডিয়ামের স্থান। প্রেসিডিয়াম বা সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা দলের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারক ফোরাম এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে তাদেরকে আনা হয়, যারা দলের রাজনীতিতে এবং দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান বিভিন্ন সময়ে রেখেছেন। একসময় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মানেই ছিল এক ঝাঁক তারকা নেতৃবৃন্দের মেলা। কিন্তু এখন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামটা অনেকটাই যেন ম্লান। বিশেষ করে প্রেসিডিয়ামের অনেক সদস্যই আছেন যারা জাতীয় নেতা হিসেবে তেমন উজ্জ্বল নন। বরং প্রেসিডিয়ামকে অনেক সময় জে'লা কোটা বা সান্ত্বনা পুরস্কারের জায়গা হিসেবেও দেখা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের এবারের কাউন্সিলে প্রেসিডিয়ামকে আরও কার্যকর এবং গতিশীল করা হবে। প্রেসিডিয়ামের মাধ্যমে যেন দল পরিচালিত হয় এবং সারাদেশের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা যায় সে ব্যাপারে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক মহল ভাবছে। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম এবার অ'ত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রূপে দেখা যেতে পারে। দলের ক্রিয়াশীল কার্যকর নেতাদেরকে প্রেসিডিয়ামে দেখা যেতে পারে।
গত কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, শাজাহান খানকে প্রেসিডিয়ামে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল এবং এরা প্রেসিডিয়ামে অন্তর্ভুক্ত হয়ে দলকে কেবল শক্তিশালী করেনি, প্রেসিডিয়ামকেও গুরুত্বপূর্ণ করেছে। কারণ তাদেরকে রাজনৈতিক কর্মকা'ণ্ডে দৃশ্যমান দেখা গেছে। আবার কিছু কিছু প্রেসিডিয়ামের সদস্য আছেন যারা তেমন ইতিবাচক নয়। প্রেসিডিয়ামের তিনজন সদস্য করো'নার সময় মৃ'ত্যুবরণ করেছে। এদের শূন্যপদ গুলো কিছুদিন আগে পূরণ করা হয়েছে এবং যে তিনজনকে দেওয়া হয়েছে তারা তিনজনই মাঠের রাজনীতিবিদ এবং ভালো সংগঠক। এ কারণেই মনে করা হচ্ছে সামনের দিনগুলোতে হয়তো আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের গুরুত্ব আরো বাড়বে এবং রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। আর সেই বিবেচনা থেকে দলের প্রেসিডিয়ামের অন্তত কয়েকজন বাদ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে যারা বাদ পড়তে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে তাদের মধ্যে বেগম সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর নাম আছেন। তিনি অ'সুস্থতাজনিত কারণে এবার প্রেসিডিয়ামে থাকবে না। তাকে হয়তো উপদেষ্টামন্ডলীতে নেয়া হতে পারে। অন্যদিকে দলের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ এবার প্রেসিডিয়াম থেকে বাদ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনিও এবার প্রেসিডিয়াম থেকে উপদেষ্টা যেতে পারেন বলে বিভিন্ন সূত্র বলছে। তবে অনেকে মনে করছেন যে না শেষ পর্যন্ত হয়তো প্রেসিডিয়ামে থাকবেন।
আওয়ামী লীগের মধ্যে রাজনীতিতে আব্দুল মান্নান খানের প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়াটা ছিলো একটা বিরাট বিস্ময়। ওয়ান ইলেভেনের ভূমিকার কারণে তাকে ২০০৮ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে তিনি প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু এরপর তিনি আর মনোনয়ন পাননি। কিন্তু তাকে প্রেসিডিয়ামে রাখা হয়েছে। এবার তিনি প্রেসিডিয়ামে থাকবেন কিনা এ নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। রমেশ চন্দ্র সেন এবং পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য্য দুইজনই জে'লা কোটায় প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়েছেন। আর এ কারণেই তাদের পরিবর্তন হতে পারে এবার। কাউন্সিলে তাদেরকে হয়তো উপদেষ্টা পরিষদে নেয়া হবে। প্রেসিডিয়ামে যে পরিবর্তন হোক না কেন প্রেসিডিয়ামকে আরো কার্যকর এবং দক্ষ করার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা, এটা মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।