আরবি ক্যালিগ্রাফি পেল ইউনেসকোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি
আরবি ক্যালিগ্রাফিসহ বেশ কয়েকটি আরবি শিল্পকে ইনেসকোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। গত বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক এ সংস্থা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। গত ১৩-১৮ ডিসেম্বর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠিত ইউনেসকোর ‘স্প'র্শাতীত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবিষয়ক আন্তরাষ্ট্রীয় কমিটির (ইন্টার গভর্নমেন্টাল কমিটি অন ইনট্যানজিবল হেরিটেজ) ১৬তম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে ক্যালিগ্রাফিসহ কয়েকটি আরবি শিল্পকে ‘মানবতার অধ'রা বা স্প'র্শাতীত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে’র তালিকাভূক্ত করা হয়।
আরব লিগের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান সংস্থার তত্ত্বাবধানে সৌদি আরবসহ ১৫টি আরব দেশের সফল সহায়তার পর ইউনেসকো এ ঘোষণা দেয়। ‘আরবি ক্যালিগ্রাফি’ : জ্ঞান, দক্ষতা ও অনুশীলন’কে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভূক্ত করা হয়।
ধ'র্মীয় গ্রন্থে আরবি ক্যালিগ্রাফি ব্যবহারের গুরুত্ব ছাড়াও ভাষার অগ্রগতি ও উন্নয়নে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে তা আরব সংস্কৃতি, রীতিনীতি ও ধ'র্মীয় মূল্যবোধের প্রচার-প্রসারে অবদান রেখেছে।
সৌদি সংস্কৃতি মন্ত্রী প্রিন্স বদর বিন আবদুল্লাহ বিন ফারহান আলে সৌদি বলেন, আম'রা আরবি ক্যালিগ্রাফির শিলালিপিকে স্বাগত জানাই। তা আসল আরব সংস্কৃতির মতো গুরুত্বপূর্ণ সৌদির দূরদান্ত সাফল্যের প্রতীক। ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিকাশে অবদান রাখবে। এরই অংশ হিসেবে ২০২০ ও ২০২১ সালে আরবি ক্যালিগ্রাফি ও শিল্পকলা বিকাশে ক্যালিগ্রাফি বছর পালন করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।’
সৌদি হেরিটেজ প্রিজারভেশন সোসাইটির জেনারেল ম্যানেজার আবদুর রহমান আলেদিন বলেন, ‘আরবি ক্যালিগ্রাফি স্প'র্শাতীত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আরব ও মু'সলিম বিশ্বে নতুন প্রজন্মের মধ্যে ইসলমী সংস্কৃতি প্রচারের অন্যতম মাধ্যম। তাছাড়া এর সামাজিক, বৈজ্ঞানিক ও ধ'র্মীয় প্রভাবও রয়েছে। এটিকে আরব ও মু'সলিম জাতির স্বাতন্ত্র্য শিল্প হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আরবি ক্যালিগ্রাফি ছাড়াও বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ফিলি'স্তিনের এমব্রয়ডারি, তুরস্কের ইস্তাম্বুলের ‘হুসনে খত’ নামের ঐতিহ্যবাহী ক্যালিগ্রাফি, ম'রক্কোর (তাবুরিদা নামে পরিচিত) অশ্বারোহন শিল্প, বাহরাইনের ফজ'রি সঙ্গীত (নাবিকদের গান), ই'রাকের পানির চাকা (কাঠের তৈরি যন্ত্র বিশেষ যা পানির শক্তিতে ঘুরে। সাধারণত ফোরাত নদীর তীরে তা দেখা যায়)।
এর মধ্যে আরো আছে (আল কুদুদ আল হালবিয়া নামের) সিরিয়ার খাঁটি আরবি ভাষার সঙ্গীত, যা প্রাচীনকাল থেকে হালব বা আলেপ্পো শহরে প্রসিদ্ধ। ‘আল কুদুদের সম্রাট’ নামে পরিচিত প্রয়াত সিরিয়ান শিল্পী সাবাহ ফাখরির মাধ্যমে ‘আল-কুদুদ আল হালাবি’ গানটি বিখ্যাত হয়েছিল।
বিশ্ব ঐতিহ্য সংস্থা বিবিৃতিতে জানিয়েছে, ‘মূলত আরবি ক্যালিগ্রাফি আরব ও মু'সলিম বিশ্বের মৌলিক সংস্কৃতির প্রতীক। আরবি ক্যালিগ্রাফিকে সংস্থাটি আরবি ভাষা লেখার শিল্প হিসেবে উল্লেখ করে এটিকে সাদৃশ্য ও সৌন্দর্য প্রতীক বলে জানানো হয়।