রুটির সঙ্কটে মিসর

যু'দ্ধের কারণে শিপিং বিপর্যয়ও প্রকট হয়েছে। তার পর যোগ হয়েছে আ'মেরিকান ও ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞা যার মধ্যে রয়েছে রাশিয়ান ব্যাংকগুলোতে সুইফট পেমেন্ট সিস্টেম বন্ধ করে দেয়া। জেনারেল আল সিসি কিভাবে অর্থ স্থা'নান্তর করবেন তা খুঁজে পাননি এখনো। সিসি এর মধ্যে সে দিন ঘোষণা দিয়েছে, গমের সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। কারণ মিসরে চার মাসেরও বেশি সময়ের গমের মজুদ রয়েছে এবং স্থানীয় গম-ফসল কা'টার মৌসুমও এপ্রিলে শুরু হবে। সরকার আরো জানায়, অন্যান্য উৎস থেকে সঙ্কটের সময় গম পাওয়ার জো'র প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন দেশে দুর্ভিক্ষ অবস্থা দেখা দিলেও সরকার ঘোষণা দেয়, পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে- এখানেও এমনি অবস্থা।
কিন্তু অন্যান্য উৎস থেকে গম পেতে মিসরের ওপর আর্থিক চাপ সৃষ্টি হবে ও উচ্চ মূল্য দিতে হবে। সম্প্রতি মিসরীয় সরবরাহ মন্ত্রণালয় খরচের কারণে গম সংগ্রহের একটি আন্তর্জাতিক দরপত্র বাতিল করেছে। সরকার ভর্তুকি দিয়ে রুটির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা এর আগে অনেকবার হয়েছে। তবে এ সময়ে মূল্য বৃদ্ধি পেলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হবে। কেননা নানাবিধ কারণে জনগণ ফুঁসছে। সিসি সে'নাবাহিনীকে ব্যাপক ক্ষমতা দিয়েছেন প্রশাসন ধরে রাখার জন্য; আবার না কখন সে'নাবাহিনী-জনগণ মুখোমুখি অবস্থানে আসে।

মিসরের পর্যটন শিল্প আয়ের এক সমৃদ্ধ খাত। কোভিড মহামা'রীর কারণে পর্যটন ধস থেকে বেরিয়ে আসার ল'ড়াই যখন চলছে তখন ইউক্রেনের বি'রুদ্ধে রাশিয়ার যু'দ্ধ সে প্রচেষ্টাকে হতাশ করেছে। মিসরীয় পর্যটন তথ্য মতে, সে দেশে রাশিয়ান ও ইউক্রেনীয় পর্যট'করা প্রতি বছর মিসরের মোট পর্যট'কদের প্রায় ৩৩ শতাংশ হয়ে থাকেন। হুরগাদা ও শারম আল-শেখ মিসরের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটন শহরে পরিণত হয়েছে। রাশিয়ান ও ইউক্রেনীয় পর্যটনের নেতৃস্থানীয়দের গন্তব্য এখানেই। এসব পর্যট'ক যু'দ্ধের পর সব রিজারভেশন বাতিল করে দিয়েছে, তাই আয়ও বন্ধ। যু'দ্ধ শেষ হলেই যে, আবার সবাই দলে দলে মিসরে ছুটবে তার ভরসাও নেই। যু'দ্ধে যে ধ্বংস ও উদ্বাস্তুর সংখ্যা সেগুলো নিরসন করতে এক দশক কুলাবে কি না, এখনো হিসাব-নিকাশ হয়নি।

অবশেষে মিসর ইউক্রেন যু'দ্ধের কারণে সৃষ্ট চাপে পড়ল। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে জ্বালানির দাম। যু'দ্ধের ফলে ২০১৪ সালের পর প্রথমবারের মতো ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১০০ মা'র্কিন ডলারকে ছাপিয়ে ওপরে উঠেছিল। মিসরে তেল ব্যারেলগুলোর দাম ৬১ মা'র্কিন ডলার নির্ধারিত ছিল। এই বৃদ্ধির ফলে জ্বালানি ভর্তুকি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, ফলে সরকারি বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা পাগলা ঘোড়ায় পরিণত হতে চলেছে। নিট জ্বালানির দাম বাড়বে, মুদ্রাস্ফীতিকে হু'মকির মুখে ফেলবে। গবেষকরা বলছেন, তেলের দাম ২০০ ডলারে উঠতে পারে!

মিসরীয় প্রবাদ আছে, ‘যারা দরিদ্রদের জীবিকাকে টার্গেট করে তারা জিতে না’; রুটি আছে তো পরিবারে শান্তি আছে। ফরাসি বিপ্লব থেকে ১৯৭৭ সালে আনোয়ার সাদাতের বি'রুদ্ধে মিসরীয় বিদ্রোহের অন্তরালে কাজ করেছে রুটি। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, আইএমএফের প্রেসক্রিপশন অনুসারে অর্থনীতির ধকল সামলাতে রুটির দাম বাড়ানো হয় ১ শতাংশ। একই সাথে আরো কিছু কৌশলগত পণ্যের দাম বাড়িয়ে বাজেট ঘাটতি মোকাবেলার জন্য এবং মিসরকে সেই ঘাটতি মোকাবেলায় সহায়তা করার জন্য আর্থিক ঋণ দিতে সম্মত হয় আইএমএফ। রুটির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত রেডিও স্টেশনগুলোর মাধ্যমে সব মিসরীয়ের কাছে পৌঁছানোর সাথে সাথে ব্যাপক বি'ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং পু'লিশ তাদের মুখোমুখি হতে অক্ষম হয়। সরকার এই মূল্যবৃদ্ধি থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল, তবে তা কিছু সময়ের জন্য, আজকের বিশাল মূল্য বৃদ্ধির সাথে তুলনীয় নয়।

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নাগরিকদের ক্লান্ত-অবসন্ন করে দেয়, কেবল দরিদ্রই নয় বরং মধ্যবিত্ত শ্রেণীও ভুক্তভোগী হয়। তবে দ্রুত মিসরে মধ্যবিত্ত শ্রেণী হ্রাস পাচ্ছে; কেননা এই শ্রেণী দরিদ্র শ্রেণীর সাথে যোগ হচ্ছে। বলা হয়, কোনো সমাজে, মধ্যবিত্ত শ্রেণী হচ্ছে সেই দেশের স্তম্ভ যা ভা'রসাম্য বজায় রাখে। কিন্তু মিসরে বলতে গেলে এখন মাত্র দু’টি শ্রেণী রয়েছে- ধনী, উচ্চ ও পরাক্রমশালী, যারা ১ শতাংশের মতো, অ'পরটি দরিদ্র শ্রেণী যারা মিসরীয় জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠকে প্রতিনিধিত্ব করে। মূল্যবৃদ্ধি, সেই আদি থেকে অর্থনৈতিক সঙ্কট মিসরের স্থায়ী সমস্যায় পরিণত হয়। অর্থ ও আরো অর্থের জন্য যু'ক্তরাষ্ট্র, আমিরাত ও সৌদির ওপর ভরসা করে দিন কা'টায় মিসর।

আল-সিসি মিসরীয়দের অ'বাক করে দিয়ে ভর্তুকিযু'ক্ত রুটির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। ৬৭ মিলিয়ন নাগরিক ভর্তুকি রুটি সরবরাহ থেকে উপকৃত। তাদের এখন মা'থায় হাত দেয়ার অবস্থা। মিসরীয়দের জন্য রুটি-সমস্যার চেয়ে বিপজ্জনক আর কিছুই নেই; এটি কেবল সাদাতের দিনগুলোতেই নয়, ২০০৮ সালে হোসনি মুবারকের শাসনামলেও বি'ক্ষোভ সৃষ্টি করেছিল।

রুটি ভর্তুকির সুবিধাভোগীর সংখ্যা সাত কোটি ১০ লাখ মানুষ, যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। রুটি ভর্তুকির মূল্য ২৫০ কোটি ডলার এবং ২০ বিলিয়ন ডলারের সাধারণ বাজেটে মোট সহায়তার ১৬ শতাংশ হলো রুটির ভর্তুকি!

আইএমএফ ঋণের শর্ত বাস্তবায়নে ভর্তুকির চূড়ান্ত বিলুপ্তির জন্য প্রতি বছর এটি হ্রাস করা হয়। জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও অন্যান্য অনেক কৌশলগত পণ্যসহ সব ভর্তুকি হ্রাস করা এক চলমান বিষয়। দরিদ্রদের জন্য এ পদ্ধতি এক অশনি সঙ্কেত। প্রায় ৩০.৩ মিলিয়ন মিসরীয় নাগরিক দারিদ্র্যসীমা'র নিচে বাস করে। মহামা'রী বিস্তারের কারণে, দারিদ্র্যের হার আরো বৃদ্ধিই পেয়েছে।

সহায়তার কথা বলা হচ্ছিল। এটি নাগরিকের একটি অন্তর্নিহিত অধিকার, যেমন- শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সহায়তা তহবিল, যা করদাতারা সম্পূর্ণরূপে অর্থায়ন করে, জনগণের পকেট থেকে, সরকারের পকেট থেকে নয়। একটি রুটির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের মাধ্যমে যে ৪৪৬ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করতে চায়, তা অর্জনের জন্য সরকার বাজেট ঘাটতি পূরণের অন্য অনেকগুলো বিকল্প ব্যবস্থা অবলম্বন করতে পারে। মিসরে রুটিই ‘বসবাসের ভা'র’, খাদ্যই দেশের কোটি কোটি নাগরিকের ম'র্যাদা রক্ষা করে।

ইউক্রেন-যু'দ্ধ কয়েক হাজার মাইল দূরে ‘রুটির যু'দ্ধ’ ছড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে খাওয়ার টেবিলে যু'দ্ধের বো'মা পড়ার আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায় যখন একটি রুটি ডিনার টেবিলে ভাগাভাগি করে খেতে হয়।

বিশ্বের গম রফতানির এক চতুর্থাংশেরও বেশি ইউক্রেন ও রাশিয়া সরবরাহ করে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও অ্যালার্ম সৃষ্টি হয়েছে, বেড়ে গেছে রুটির দাম। রুটি ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেক স্থানে যেমন- লেবাননে রুটি সংরক্ষণ করছে লোকজন। মিসরের বেকাররা বলছেন, ময়দার উচ্চদামের তাপ বেকারির চুল্লির চেয়েও বেশি। বিশ্লেষকরা মনে করেন, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকাজুড়ে, ইউক্রেনের যু'দ্ধ সৃষ্ট খাদ্যের দামের প্রভাব লাখ লাখ লোককে ‘খাদ্য দারিদ্র্যের’ দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যেমন- ইয়েমেন, এখন সম্পূর্ণরূপে খাদ্য আম'দানির ওপর নির্ভরশীল। ইউক্রেন থেকে ২৭ শতাংশ ও রাশিয়া থেকে ৮ শতাংশ গম কেনে। খাদ্যের অভাবে দুই বছর ধরে সেখানে দুর্ভিক্ষাবস্থা। এখন ইয়েমেনিদের ম'রার জন্য কোনো অ'স্ত্রের দরকার নেই।

সাত বছরের সঙ্ঘাতে ইয়েমেনের অর্থনীতি পর্যুদস্ত। কর্মসংস্থান তো নেই, খাদ্যের দাম দ্বিগুণ ছিল। অনেক স্থানে তিনগুণ, তা-ও চাহিদা মতো পাওয়া যায় না। দেশের ৩০ মিলিয়ন মানুষের অর্ধেকেরও বেশি ক্ষুধার্ত। আন্তর্জাতিক উ'দ্ধার কমিটি তথ্য প্রকাশ করেই চলছে- খাবার আসবে কিভাবে কোনো সমাধান নেই যেন। ২০২১ সালে অর্থায়নের ঘাটতির কারণে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি, ডব্লিউএফপি আট মিলিয়ন ইয়েমেনের নাগরিকদের সহায়তা সঙ্কুচিত করতে বাধ্য হয়েছিল। এখন সবাই ইউক্রেন শরণার্থী নিয়ে ব্যস্ত। ইয়েমেনের ক্ষুধার খবর নেয়া যেন আয়েশি ভাবনা।

মিসর বিশ্বের বৃহত্তম গম আম'দানিকারক, ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে তার গমের ৯০ শতাংশ নিয়ে আসে। বিশ্ব ব্যাংকের মতে, মিসরের ১০ কোটি মানুষের এক-তৃতীয়াংশই কোভিড-১৯ মহামা'রী আ'ঘাত হানার আগে থেকেই দারিদ্র্যসীমা'র নিচে বসবাস করছিল। রুটিকে সাশ্রয়ী করার জন্য রুটির দামের ওপর সিলিং ধরে দিয়েছিল সরকার। ২০০৮ সালের পর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম চড়া হলে সরকার ১৯৮০-এর দশকের পর ভর্তুকিযু'ক্ত রুটির দাম বাড়ায়। মিসরীয় বেকাররা এরই মধ্যে ব্যয়বহুল ময়দা ও রান্নার তেল সরবরাহের দংশন অনুভব করছিল। রাশিয়া ও ইউক্রেন গম ছাড়াও সূর্যমুখী তেলের প্রধান সরবরাহকারী।

লেবাননে খাদ্যের দাম আরো বৃদ্ধির সম্ভাবনা, ২০১৯ সালে শুরু হওয়া গভীর অর্থনৈতিক সঙ্কট এবং মুদ্রার অবমূল্যায়নে এরই মধ্যে দু’বেলা রুটি লাখ লাখ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে।

থমসন ফাউন্ডেশনের মতে, কেউ কেউ সপ্তাহান্তে স্ট'ক বাড়ানোর চেষ্টা করেছিল, এই প্রত্যাশায় যে, সামনের দিনগুলোতে দাম বাড়বে। তা ছাড়া বেকারিতে একটির বেশি রুটির বান্ডিল পাওয়া প্রায় অসম্ভব। লোকজন বলে বেড়ায়, ইউক্রেনে নয় মিসর, লেবানন, ইয়েমেন ও সিরিয়ায় যেন যু'দ্ধ হচ্ছে।

যদিও গম আম'দানিতে ভর্তুকি দেয়া হয় এবং সরকার রুটির দাম বেঁধে দেয়, তবে রুটি এরই মধ্যে কিছু লেবানিজের জন্য বিলাসিতা হয়ে উঠেছে। একটি রুটির বান্ডিলের বেশি কেনার জন্য কালোবাজার সৃষ্টি হয়েছে, এখন রুটি খেয়ে বেঁচে থাকার যু'দ্ধ শুরু হয়েছে!

ইউক্রেন সঙ্কটে যু'দ্ধবি'ধ্বস্ত ইয়েমেনসহ আরব বিশ্বের বিভিন্ন অংশে গম-রুটির অভাব ফুলে ফেঁপে উঠতে শুরু করেছে। লাখ লাখ মানুষ এরই মধ্যে অনাহারের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে কিছু দেশে বি'ক্ষোভ ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘যদি কোনো যু'দ্ধ এসব সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটায়, তা হলে তা মিসর, ইয়েমেন, লিবিয়া, লেবানন ও অন্যান্য দেশের মতো খাদ্য আম'দানিনির্ভর দেশগুলোকে মা'রাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ক্রমবর্ধমান শক্তি ও খাদ্যের দামের মধ্যে, ইউক্রেন সঙ্কট বেশ কয়েকটি দেশে নতুন করে বি'ক্ষোভ ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পারে।

গত বছর মা'র্কিন কৃষি বিভাগ এক গবেষণায় প্রকাশ করে, মধ্যপ্রাচ্যে ২৬ মিলিয়ন টনেরও বেশি গম আম'দানি করেছে যার বেশির ভাগই রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে। এ অঞ্চলটি বিদেশী শস্যের ওপর নির্ভরতা বাড়িয়ে তুলবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল, যা গড় বৃষ্টিপাতের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত এবং উচ্চ তাপমাত্রার কারণে বৃদ্ধি পায়, যা ই'রান, ই'রাক ও সিরিয়ায় গমের ফলনকে প্রভাবিত করে। ইয়েমেনে রুটি লাখ লাখ মানুষের জন্য একটি বিলাসিতা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যেখানে সাত বছরের যু'দ্ধ বিশ্বের সবচেয়ে খা'রাপ মানবিক সঙ্কটের সৃষ্টি করেছে। ডব্লিউএফপির মতে, সিরিয়ার ১২.৪ মিলিয়ন মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সাথে ল'ড়াই করছে, অথচ ২০১১ সালের গণ-অভ্যুত্থান ও পরবর্তী গৃহযু'দ্ধের আগে, জনসংখ্যার চাহিদা পূরণে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিল, কিন্তু এখন খাদ্য আম'দানি করতে হচ্ছে। গত বছর রাশিয়া থেকে ১.৫ মিলিয়ন টন গম আম'দানি করা হয়েছিল।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর বিশ্বব্যাপী গম সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ফলে যু'দ্ধবি'ধ্বস্ত ইয়েমেনের ক্ষুধা সঙ্কট এবং খাদ্যমূল্যের মূল্যস্ফীতি গভীরতর হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে।

ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম বলেছে, ইউক্রেন সঙ্কট মিসরের মতো আম'দানিনির্ভর, ইয়েমেনে জ্বালানি ও খাদ্যের দাম, বিশেষ করে শস্যের দাম বাড়িয়ে তুলছে। গত এক বছরে অনেক এলাকায় খাদ্য খরচ দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। ইয়েমেনের সঙ্ঘাত, রুটির অভাব ও মুদ্রাস্ফীতি লাখ লাখ ইয়েমেনিকে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে।

বিশ্ব খাদ্য সংস্থার প্রধান ডেভিড বিসলি মিসর ও ইয়েমেন প্রসঙ্গে কঠিন কথা বলেছেন, ‘এখন অবস্থা এমন যে, ক্ষুধার্তদের খাওয়ানোর জন্য অন্য ক্ষুধার্তের কাছ থেকে খাবার নেয়া ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় নেই’!

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব ও গ্রন্থকার

Back to top button