পা'কিস্তানকে দিয়ে যু'ক্তরাষ্ট্র কাকে শিক্ষা দিলো
পা'কিস্তানের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ঘটেছে। মধ্যরাতে পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব পাস হয়েছে এবং ইম'রান খানকে পদচ্যুত করা হয়েছে। পা'কিস্তানের এই ঘটনাটি কেবল পা'কিস্তানের একটি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ঘটনা নয় বরং পা'কিস্তানের ঘটনার সঙ্গে আন্তর্জাতিক নানা ঘটনার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া জড়িত। পা'কিস্তানের ঘটনাটির একটি সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। পা'কিস্তানের ঘটনায় যেভাবে সেই দেশটির সুপ্রিম কোর্ট মধ্যরাত পর্যন্ত সজাগ থেকেছেন, যেভাবে সেখানে সে'নাবাহিনী ভূমিকা পালন করেছে, তা গণতন্ত্রের জন্য একটি তামাশায় পরিণত হয়েছে। একটি দেশে এভাবে গণতন্ত্র চলতে পারে কিনা, সেই প্রশ্ন সামনে চলে এসেছে। সেখানে পা'কিস্তানে ইম'রান খানের দলের ভিতরে বেচাকেনা হয়েছে। ইম'রান খান নিজেই বলেছেন যে, তার দলের অনেকেই বিশ্বা'সঘা'তকতা করেছেন। ইম'রান খান প্রধানমন্ত্রী থাকল না সেটা বড় কথা নয়, কিন্তু পা'কিস্তানের সরকার পতন কেন হলো সেটি বিশ্লেষণের দাবি রাখে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, পা'কিস্তানের সরকার পতনের ক্ষেত্রে একাধিক কার্যকারণ আছে। তবে পা'কিস্তানের সরকার পতনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে মা'র্কিন যু'ক্তরাষ্ট্র। মা'র্কিন যু'ক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইম'রান খানের টানাপোড়েন নতুন করে নয়, ইম'রান খান ২০১৮ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে নিজেকে নতুন কূটনীতির প্রবক্তা হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করেন এবং সেই লক্ষ্য থেকেই তিনি চীনের সঙ্গে গভীর স'ম্পর্ক তৈরি করেন এবং প্রকাশ্যে মা'র্কিন যু'ক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করেন। তিনি মা'র্কিন যু'ক্তরাষ্ট্রের কথায় সবকিছু হবে হবে না বলেও ঘোষণা করেন। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার ছিলো যে, রাশিয়া-ইউক্রেন যু'দ্ধের আগে আগে ইম'রান খান রাশিয়ায় যান এবং এই যু'দ্ধে রাশিয়ার পক্ষে তিনি অবস্থান গ্রহণ করেন। সবকিছু মিলিয়ে মা'র্কিন যু'ক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন ইম'রান খান।
এই উপমহাদেশের বাস্তবতায় মা'র্কিন যু'ক্তরাষ্ট্রের জন্য পা'কিস্তান একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং পা'কিস্তান দীর্ঘদিনের সাম'রিক কৌশলগত দিক থেকে মা'র্কিন যু'ক্তরাষ্ট্রের মিত্র। সেই কৌশলগত মিত্র যদি চীনের দখলে চলে যায় তাহলে সেটি যু'ক্তরাষ্ট্রের জন্য এক ধরনের হু'মকি। আর এ কারণেই যু'ক্তরাষ্ট্র এই কাজটি করেছে বলে অনেকে মনে করেন। তাছাড়া এর পেছনে প্রধান কারণ ছিলো যে, যু'ক্তরাষ্ট্র দেখিয়ে দিলো যে পা'কিস্তানে তারা যা চাই সেটিই হয়। কারণ, পা'কিস্তানে এলিট শ্রেণী বিশেষ করে সে'নাবাহিনী, বিচার বিভাগ ইত্যাদি সবই যু'ক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত। কাজেই তাদের বাইরে গিয়ে কেউ প্রধানমন্ত্রীত্ব করতে চাইলে তার যে কি পরিণাম হয় সেটি ইম'রান খানকে দিয়ে যু'ক্তরাষ্ট্র দেখিয়ে দিলো। তবে পা'কিস্তান ছোট ছোট গণতান্ত্রিক দেশগুলোর জন্য একটি শিক্ষা। পা'কিস্তান আবার স্নায়ুযু'দ্ধের সময়ে ফিরে গেছে বলে অনেকে মনে করছেন। যেকোনো দেশের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা, প্রধানমন্ত্রীকে হ'ত্যা করা বা সরকারপ্রধানকে ক্ষমতাচ্যুত করার মতো কাজগুলো যু'ক্তরাষ্ট্র করতো সত্তর-আশির দশকে। আবার সেই ধারায় মা'র্কিন যু'ক্তরাষ্ট্র ফিরে গেল কিনা, পা'কিস্তানের ঘটনা সেই প্রশ্নকে সামনে নিয়ে এসেছে।