স্কুটি কিনে দেওয়াই কাল হলো মাইশার

মেধাবী শিক্ষার্থী মাইশা মমতাজ ওরফে মিমের মৃ'ত্যু মেনে নিতে পারছে না তার পরিবার। শোকে পাথর হয়ে আছে বাবা-মা, স্বজনরা। তার মৃ'ত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজে'লার মৌচাক এলাকায়। বাবা একটি বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ হওয়ায় তার শত শত শিক্ষার্থী তাদের বাড়িতে ভীড় করছেন। সবার মুখেই একই কথা কেন তাকে স্কুটি কিনে দেওয়া হলো। স্কুটিটা না দিলে আজ তার মৃ'ত্যুর সংবাদ পেতে হতো না।

শনিবার (২ এপ্রিল) সকালে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় আশপাশের মানুষজন নানা ভাবে বাবা নূর মোহাম্ম'দ ও মা অছিমা বেগমকে শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু বাবা-মায়ের মন কোনে ভাবেই শান্ত হচ্ছে না। বিলাপ করছেন আর বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন।বাবা নূর মোহাম্ম'দ মুখে একই কথা, ‘তোম'রা আমা'র মিমকে এনে দাও। মাগো তুমি আমাদের ছেড়ে কোথায় চলে গেলা। তুমি ফিরে আসো’।

মাইশা মমতাজ মীম বাবা মায়ের বড় মে'য়ে। মেধাবী ছা'ত্রী মীম তার বাবা নুর মোহাম্ম'দ মামুনের প্রতিষ্ঠিত গাজীপুরের কালিয়াকৈরে মৌচাক আইডিয়াল পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাশ করে ভর্তি হন নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে তিনি ইংরেজী বিভাগে ৬ষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন।

মাইশার মৃ'ত্যুর পর সড়ক দুর্ঘ'টনার একটি ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যায়, মাইশা উড়াল সড়কের এক পাশ দিয়েই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ পেছন থেকে বড় একটি কাভা'র্ডভ্যান তার স্কুটির পিছনে ধাক্কা দেয়। এতে সে পড়ে গিয়ে কাভা'র্ডভ্যানের চাকার নীচে চাপা পড়ে। এরপর ট্রাকটি একটু সামনে গিয়ে দাড়ায়। ট্রাকের ভিতর থেকে চালক বা সহযোগি ওকি দিয়ে সেই দৃশ্য দেখে এবং তাৎক্ষণিক ট্রাকের চালক ট্রাকটি নিয়ে পালিয়ে যায়।

নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষার্থী শুক্রবার সকালে ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় সড়ক দুর্ঘ'টনায় মীম নি'হত হওয়ার খবর এলাকায় পৌছালে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার শিক্ষক, সহপাঠী, আত্মীয়-স্বজন এবং এলাকাবাসী ছুটে আসেন তাদের গ্রামের বাড়িতে। বিকালে তার ম'রদেহ গ্রামের বাড়ি মৌচাকে আসার পর স্বজনরা কা'ন্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তাকে এক নজর দেখার জন্য মৌচাক আইডিয়াল পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী, অ'ভিভাবক ও এলাকার শতশত মানুষ ছুটে আসেন।

স্থানীয় স্কুল শিক্ষক আবুল কালাম বলেন, মাইশা মমতাজ মীম অ'ত্যান্ত মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। দুই বোনের মধ্যে মীম বড়। তার ছোট বোন রৌদোসী মমতাজ মৌ উত্তরা রাজউক কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পাস করে শুক্রবার মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার সকালে উত্তরার বাসা থেকে বের হয়ে স্কুটি যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য যাচ্ছিলেন। পথে কুড়িল ফ্লাইওভা'র থেকে নামা'র পথে একটি কাভা'র্ড ভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মা'রা যান মীম। পরে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে পু'লিশ ম'রদেহ উ'দ্ধার করে ময়না ত'দন্তের জন্য হাসপাতা'লে পাঠায়।

Back to top button