৫ ইস্যুতে অসন্তোষ বাড়ছে জনগণের

ক্রমশ জনগণ অসন্তোষ প্রকাশ করছে। আগে যেটি অস্বস্তি ছিলো, সেই অস্বস্তির এখন প্রকাশ্য রূপ দেখা যাচ্ছে। হাটে-বাজারে গেলে মানুষের মধ্যে বির'ক্তি এবং বির'ক্তিসূচক কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে। আর এই সমস্ত নেতিবাচক কথাবার্তা জনঅসন্তোষ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে এবং এটি সরকারের জন্য যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন। কারণ, এই প্রথম জনগণ সরকারের ব্যাপারে নানা রকম নেতিবাচক মন্তব্য করছে। নির্বাচনের মাত্র দুই বছর আগে জনগণের এরকম নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি জনপ্রিয় একটি সরকারের জন্য কখনও ইতিবাচক নয়। যে বিষয়গুলো নিয়ে জনমনে অস্থিরতা এবং অসন্তোষ বাড়ছে তার মধ্যে রয়েছে:

১. তীব্র গ্যাস-সংকট: হঠাৎ করে তীব্র গ্যাস সংকটে রাজধানীবাসীর জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বহু জায়গায় রান্না করা যাচ্ছেনা। মানুষ হোটেল রেস্টুরেন্টে খাবারের উপর নির্ভর করছে। রমজান মাসে শুরুটা মানুষ সবসময় বাড়িতে ভালো মন্দ রান্না করে ইফতার করতে চায়, সেহেরি করতে চায়। কিন্তু সেই সুযোগটা এখন পাচ্ছে না। প্রশ্ন উঠেছে যে, হঠাৎ করে গ্যাস সংকটের কারণ কি? এটি কি সরকারকে চাপে ফেলার জন্য? সরকারের জনপ্রিয়তা নষ্টের জন্য? না হলে এত সময় থাকতে শেভরনের গ্যাস উত্তোলনের সমস্যা রমজান মাসেই হবে কেন? এটি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা দরকার বলে অনেকে মনে করছেন। গ্যাস সংকটের কারণে ঢাকার জনজীবনে এক দুর্বিষহ অবস্থার তৈরি হয়েছে এবং মানুষের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য কর যাচ্ছে।

২. নিয়ন্ত্রণহীন দ্রব্যমূল্য: দ্রব্যমূল্য কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় বারবার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য নানা পদক্ষেপের কথা বলা হচ্ছে। সর্বশেষে টাস্কফোর্সের কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু এসব সত্ত্বেও দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি মানুষকে বেসামাল করে ফেলেছে এবং বাজার হাটে গেলেই মানুষের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

৩. তীব্র যানজট: রাজধানী ঢাকা যেন এক অচল জনপদে পরিণত হয়েছে। আপনি বাসা থেকে বেরিয়ে কখন অফিসে যাবেন কিংবা অফিস থেকে বেরিয়ে কি অবস্থায় বাসায় যাবেন সে স'ম্পর্কে কিছুই জানেন না। যানজট এমন ভয়াবহ অবস্থার গেছে যে, প্রচুর সংখ্যক মানুষকে ইফতার করতে হচ্ছে রাস্তায় বসেই। আর এ সমস্ত কারণে মানুষের মধ্যে জনভোগান্তি যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে অসন্তোষও।

৪. ছিনতাই-খু'ন: এর মধ্যে আবার নতুন উপদ্রব তৈরি হয়েছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি। বিভিন্ন সময়ে ছিনতাই, খু'নের ঘটনা ঘটছে, আর এই সমস্ত ঘটনাগুলো এখন বেশ বেড়ে গেছে। রোজার আগে শাজাহানপুরের ডাবল মা'র্ডার এবং মিরপুরে ছিনতাইকারীদের ছু'রিতে চিকিৎসকের মৃ'ত্যু পর অনেকে মনে করেছিলেন যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির লাগাম টেনে ধ'রা সম্ভব হবে। কিন্তু বাস্তবে সেটা সম্ভব হয়নি। বরং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমশই ক্রমাবনতি ঘটছে। ইদানীং আবার কি'শোর গ্যাং এর মতন নতুন উপদ্রব জনগণের জন্য অস্বস্তির নতুন কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সংশ্লিষ্টরা মনে করেন যে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যদি এখনই নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তাহলে সামনে পরিস্থিতির কঠিন হবে।

৫. অনিরাপদ সড়ক: সড়ক দুর্ঘ'টনাও বাড়ছে। একদিকে যানজট, অন্যদিকে সড়ক দুর্ঘ'টনা। ফলে মানুষের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ এবং অসন্তোষ দানা বেঁধে উঠছে। সংশ্লিষ্ট সকলের মনে করেন যে, অবিলম্বে এই বিষয়গুলোর দিকে সরকারের মনোযোগ দেয়া উচিত। না হলে এই অসন্তোষ এবং ছোট ছোট বিষয়ে মানুষের যে ক্ষোভ তা সরকারের ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করবে।

Back to top button