সামনে যে সংকটগুলো বাড়বে

আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও নানামুখী সংকট বেড়েছে। বিশেষ করে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জিনিসপত্রের দাম লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে, সংকট বাড়ছে অন্যান্য ক্ষেত্রেও। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বলছে যে, সামনের দিনগুলোতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বাড়বে। বাংলাদেশে যে এর প্রভাব পড়বে, সেটি বলাই বাহুল্য। তবে সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে একটি কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে, অনেকগুলো সংকট বাড়বে। শুধু দ্রব্যমূল্য নয়, বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। এই কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে:

১. বিশ্ববাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি:

বিশ্ববাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়বে। তাছাড়া বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি গম আম'দানি করে রাশিয়া এবং ইউক্রেন থেকে। ফলে গমের ক্ষেত্রে একটা বড় সংকট তৈরি হতে পারে। সেখান থেকে আম'দানি যদি না করতে পারে তাহলে বিকল্প বাজার খুঁজতে হবে এবং সেটি সরকারের জন্য এক ধরনের সংকট তৈরি করতে পারে।

২. সার: খাদ্য উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশকে সারের উপর নির্ভর করতে হয়। বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি ইতিবাচক দিক হলো খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা। কিন্তু এবার এবার বাংলাদেশ সারের সংকটে ভুগতে পারে। কারণ, বাংলাদেশে যে সার ব্যবহৃত হয় সে সার গুলো আসে রাশিয়া থেকে। ফলে এক ধরনের সার সঙ্কট তৈরি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

৩. আন্তর্জাতিক চাপ:

রাশিয়া-ইউক্রেন যু'দ্ধের ফলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক চাপের সঙ্কটে পড়বে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ রাশিয়াকে মানবাধিকার সংস্থা থেকে বহিষ্কারের যে প্রস্তাব, সেই প্রস্তাবেও ভোট দেয়নি। এটিও পশ্চিমা বিশ্বে নেতিবাচকভাবে দেখা হচ্ছে। যু'দ্ধ যতো দীর্ঘস্থায়ী হবে তত বাংলাদেশকে একটি পক্ষভুক্ত হতেই হবে। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত নিরপেক্ষ অবস্থানে রয়েছে। এই নিরপেক্ষ অবস্থান হয়তো মা'র্কিন যু'ক্তরাষ্ট্র বা অন্যান্যদের পছন্দ নাও হতে পারে। ফলে সামনের দিনগুলোতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের চাপ আসবে বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

৪. নির্বাচনের সঙ্কট:

সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে এবং এই নির্বাচনে এখন পর্যন্ত বিএনপি বলেছে যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। কিন্তু এই নির্বাচনে বিএনপিকে আনা সরকারের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। এখনও যেহেতু নির্বাচনের অনেক বাকি সেজন্য সরকার এই চাপটা অনুভব করছে না। কিন্তু যতই নির্বাচনের সময় কাছে আসবে ততই সরকার এ ধরনের চাপ অনুভব করবে বলে অনেকে মনে করছেন।

৫. ধ'র্মীয় অসহিষ্ণুতা:

বিভিন্ন ছোট ছোট বিষয় নিয়ে এখন ধ'র্মীয় অসহিষ্ণুতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে হিজাব নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে, টিপ নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে -এগুলো নির্বাচনের আগে আরো ছড়িয়ে পড়বে তৃণমূল পর্যন্ত এবং ধ'র্মীয় এক ধরনের উগ্রতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটি সরকারের জন্য নতুন মা'থাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে।

৬. প্রশাসনের ভিতর ষড়যন্ত্রকারী:

প্রশাসনের ভিতর সরকারের ষড়যন্ত্রকারীদের অবস্থা ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে এবং এরা সরকারের ক্ষতি করার জন্য চেষ্টা করছে বলে অনেকে মনে করেন। এরাই হয়তো সরকারের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

কাজেই এই সমস্ত বিষয়গুলো মোকাবেলা করাই হলো আগামীদিনে সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

Back to top button