র'ক্তের অক্ষরে লেখা বাংলাদেশ-ভা'রত মৈত্রী অবিচ্ছেদ্য

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশ-ভা'রত সম্প্রীতি ও মৈত্রী র'ক্তের অক্ষরে লেখা এবং এ মৈত্রী অবিচ্ছেদ্য। যতোদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততোদিন বাংলাদেশের অভ্যূদয়ের সাথে ভা'রতের অবদানের কথা স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে।’

তিনি আজ রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ-ভা'রত সম্প্রীতি পরিষদ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযু'দ্ধ, বাংলাদেশ ও ভা'রতের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অ'তিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।
পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. মো: ফজলে আলীর সভাপতিত্বে ও মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ হোসেন চৌধুরীর পরিচালনায় সাবেক রাষ্ট্রদূত অধ্যাপক ড. নীম চন্দ্র ভৌমিক, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: সালাউদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক তালুকদার প্রমুখ সভায় বক্তব্য রাখেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘১৯৭১ সালে ভা'রতের সার্বিক সহযোগিতা ছাড়া কখনো আমাদের পক্ষে নয় মাসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন করা সম্ভবপর হতো না। একাত্তর সালে এক কোটি মানুষ ভা'রতে আশ্রয় গ্রহণ করেছিলো। ভা'রত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলো। ভা'রত পরবর্তীতে পা'কিস্তানের বি'রুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে যু'দ্ধ ঘোষণার পর, ভা'রতের সে'নাবাহিনী আমাদের মুক্তিবাহিনীর সাথে একযোগে পা'কিস্তানি বাহিনীর বি'রুদ্ধে ল'ড়াই করেছে। ভা'রতের সে'নাবাহিনীর শতশত সদস্য আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য শহীদ হয়েছেন। তাই ভা'রতের সাথে আমাদের যে মৈত্রী, আমাদের যে স'ম্পর্ক, সেটি র'ক্তের অক্ষরে লেখা। শুধু তাই নয়, যখন পা'কিস্তানের কারাগারে থাকা বঙ্গবন্ধুর ফাঁ'সির রায় ঘোষণা হয়, তখন তৎকালীন ভা'রত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করার জন্য, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্বজনমত সংগঠিত করার জন্য পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছেন, সেজন্য আমি গভীর কৃতজ্ঞতাভরে শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর অবদানকে স্ম'রণ করি।’

১৯৭১ সালে ভা'রতের মানুষ বাংলাদেশিদের জন্য তাদের আঙ্গিনার দুয়ার যেভাবে খুলে দিয়েছিলো, তেমনি তাদের হৃদয়ের দুয়ারও খুলে দিয়েছিলো উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, এককোটি মানুষ ভা'রতের যে বিভিন্ন পরিবারের সাথে আশ্রিত ছিলো, তারা তাদেরকে বোঝা মনে করেনি, পরম আপন ভেবে আশ্রয় দিয়েছিলো। ভা'রতের শিল্পী, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, খেলোয়াড় সবাই আমাদের মুক্তিযু'দ্ধের পক্ষে ছিলেন। কোলকাতা, আগরতলা, দিল্লীসহ বিভিন্ন শহরের রাস্তায় রাস্তয় তারা আমাদের শরণার্থীদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছেন। তাই ভা'রত-বাংলাদেশের মৈত্রী চিরঅম্লান এবং এই মৈত্রী র'ক্তের অক্ষরে লেখা।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এবং ভা'রতের নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভা'রত-বাংলাদেশ মৈত্রী একটি নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। আমাদের দুর্যোগ, দুর্বিপাকে ভা'রত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, আম'রাও সাম'র্থ্য অনুযায়ী ভা'রতের প্রয়োজনে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি -এভাবেই বন্ধুত্ব সুদৃঢ় হয়। উপমহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য বৃদ্ধি করার মধ্যেই এ অঞ্চলের উন্নয়ন নিহিত উল্লেখ করে বাংলাদেশ-ভা'রত সম্প্রীতি পরিষদ দু’দেশের মধ্যে আরো বেশি সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান ও দু’দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন হাছান মাহমুদ।

ড. হাছান বলেন, ‘আমাদের দেশে বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল ভা'রতের এই অবদানকে অস্বীকার করার চেষ্টা করে, ভা'রতবিরোধী বক্তৃতা দেয়। তাদের রাজনীতির অন্যতম মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ভা'রতবিরোধিতা এবং নির্বাচন এলে তাদের ভা'রতবিরোধী বক্তৃতা বেড়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘তারা যখন ক্ষমতায় ছিলো আম'রা দেখেছি, একদিকে দেশে বসে ভা'রতবিরোধিতা করে, আবার ভা'রতে গিয়ে একেবারে নতজানু নীতি অবলম্বন করে। তাদের নেত্রী ভা'রত থেকে দামী শাড়ি পরে এসে, ভা'রতের বি'রুদ্ধে কড়া বক্তৃতা দেন। বিএনপিসহ যেসমস্ত রাজনৈতিক দল ভা'রতবিরোধী রাজনীতি বক্তব্য দিয়ে প্রেসক্লাব-নয়াপল্টন-টেলিভিশনের পর্দা গরম করেন, তারা আবার ভা'রতীয় হাইকমিশনে ইফতার করতে যান। আশা করবো, তাদের এই অ'পরাজনীতি বন্ধ হবে।’

Back to top button