বাংলা ভাষাকে অস্বীকার করা মানে স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে একদিন এদেশে অসাম্প্রদায়িক বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটেছিল। যার ওপর ভিত্তি করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে ২৩ বছর রাজনৈতিক সংগ্রাম এবং ৯ মাসের মুক্তিযু'দ্ধের মধ্যদিয়ে অর্জিত হয়েছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। বাংলা ভাষা, সংস্কৃতিকে অস্বীকার করা মানে স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বাংলা নববর্ষ-১৪২৯ উপলক্ষে দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাগতিক নিয়মের পথ পরিক্রমায় বছর শেষে আমাদের মধ্যে আবার এসেছে নতুন বছর- ১৪২৯ বঙ্গাব্দ। সবাইকে নতুন বছরের আন্তরিক শুভেচ্ছা। শুভ নববর্ষ। মু'সলমানদের সিয়াম সাধনার পবিত্র রমজান মাস চলছে। আমি সব ধ'র্মপ্রা'ণ মু'সলমানকে পবিত্র মাহে রমজানের মোবারকবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, করো'না মহামা'রির মধ্যেই আম'রা বিগত দুই বছরের অধিক সময় অ'তিক্রম করলাম। এই ম'রণঘাতী ভাই'রাসে আ'ক্রান্ত হয়ে আম'রা হারিয়েছি আমাদের অনেক প্রিয়জনকে, আপনজনকে। আমি সবার রুহের মাগফিরাত এবং আত্মা'র শান্তি কামনা করছি। স্বজনহারা পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, এ ভূখণ্ডের হাজার বছরের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং কৃষ্টির বাহক এদেশের বাঙালি জনগোষ্ঠী। বিভিন্ন ধ'র্মে-বর্ণে বিভক্ত হলেও ঐতিহ্য ও কৃষ্টির জায়গায় সব বাঙালি এক এবং অ'ভিন্ন। নানা ঘাত-প্রতিঘাতে অনেক ঐতিহ্য হারিয়ে গেলেও পহেলা বৈশাখ নববর্ষ উদযাপন এখনও স্বমহিমায় টিকে আছে। সারা বছরের ক্লেদ-গ্লানি, হতাশা ভুলে এদিন সব বাঙালি নতুন আনন্দ-উদ্দীপনায় মেতে ওঠেন। ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো/মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা/অ'গ্নিস্নানে শুচি হোক ধ'রা’ – কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কালজয়ী এই গান গেয়ে আম'রা আবাহন করি নতুন বছরকে।
তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখের বর্ষবরণ বাঙালির সর্বজনীন উৎসব। আবহমানকাল ধরে বাংলার গ্রামগঞ্জে, আনাচে-কানাচে এই উৎসব পালিত হয়ে আসছে। গ্রামীণ মেলা, হালখাতা, বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার আয়োজন ছিল বর্ষবরণের মূল অনুষঙ্গ। ব্যবসায়ীরা আগের বছরের দেনা-পাওনা আদায়ের জন্য আয়োজন করতেন হালখাতা উৎসবের। গ্রামীণ পরিবারগুলো মেলা থেকে সারা বছরের জন্য প্রয়োজনীয় তৈজসপত্র কিনে রাখতেন। গৃহস্থ বাড়িতে রান্না হতো সাধ্যমতো উন্নতমানের খাবারের।
সরকারপ্রধান বলেন, ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের চল ছিল। আজিমপুর, ওয়ারি, ওয়াইজঘাট, মৌলভীবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে হালখাতা উৎসব হতো, মেলা বসতো, মেলায় পণ্য বেচাকেনা, গান-বাজনা, যাত্রা-সার্কাস ইত্যাদির আয়োজন হতো। ষাটের দশকে রমনার বটমূলে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের বর্ষবরণ সঙ্গীত পরিবেশন শুরু হয়।