জুনেই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হতে পারে পদ্মা সেতু

চলতি বছরের জুনে দেশের বৃহত্তম পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন দ্য পদ্মা মাল্টিপারপাস ব্রীজ অথরিটি।

প্রজেক্ট ডিরেক্টর মো. শফিকুল ইস'লাম জানান, ‘ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর ৯২ শতাংশ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। চলতি বছরের জুনের মধ্যে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু উদ্বোধনের লক্ষ্য রয়েছে আমাদের।’
তিনি বলেন, ‘মূল ব্রীজের ৯৭ শতাংশ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া নির্মাণ সংক্রান্ত মোট কাজের ৯২ শতাংশ শেষ হয়েছে। প্রজেক্ট প্রধান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় অবশিষ্ট ৮ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করতে আম'রা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’

উন্নয়ন কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট অঙ্গসংস্থানবিদসহ কর্মক'র্তারা জানান, নদী শাসনের কাজ শেষ করাটাই এখন বড় কাজ, যার ৯০ দশমিক ৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

এই সেতু ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অংশের প্রায় কয়েক মিলিয়ন মানুষের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যোগাযোগের সময় সাশ্রয়ী হবে।

অর্থনীতিবিদরা বলেন, দৈনন্দিন ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পর্যটন, শিল্প প্রচার বিশেষ করে অর্থনৈতিক ল্যান্ডস্কেপের পরিবর্তনের মাধ্যমে পদ্মা সেতু দেশের জিডিপি বাড়াবে দেড় থেকে দুই শতাংশ।

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহেনাকে নিয়ে নিজে কাজের অগ্রগতি দেখতে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পদ্মাসেতু পরিদর্শন করেন। ওইদিন সকালে তাঁরা সেতুর উপর দিয়ে পিলার ৭ থেকে ১৮ পর্যন্ত দুই কিলোমিটার হাঁটেন।

শরিয়তপুরগামী এক যাত্রী মো. শরিফুল ইস'লাম বলেন, ‘আম'রা জুনে ব্রীজের ওপর দিয়ে যান চলাচলের জন্যে অধির আগ্রহে অ'পেক্ষা করছি।’

এর আগে, শেখ হাসিনা ঘোষনা দেন যে তাঁর সরকার বিশ্ব ব্যাংকের মত বিদেশি দাতাদের উপর নির্ভরশীল না হয়ে, বাংলাদেশের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্রীজ নির্মাণ করবে। যারা প্রকল্পটি শুরু করার আগেই তহবিল ব্যবস্থাপনার জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী অঙ্গিকারের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন, যা ২০২৩ সালের নির্বাচনে এই সরকারের জন্য সাফল্য বয়ে আনবে।

বাংলাদেশ ব্রীজ অথরিটির (বিবিএ) কর্মকতারা বলেন, ৪-লেনের রাস্তায় ২২ মিটার প্রসস্ত কংক্রিট ডেক স্লাব আপার ডেকে এবং সিংগেল ট্রাক ডুেয়ল গেজ রেলওয়ে ট্রাক বসবে লোয়ার ডেকে।

তারা বলেন, ব্রীজটিতে ৭৬০ এমএম ডায়া গ্যাস ট্রান্সমিশন লাইন, ১৫০ এমএম ডায়া ফাইবার অ'পটিকাল এন্ড টেলিফোন ডাক্ট, হাই ভোল্টেজ ইলেকট্রিক লাইন এবং মুল ব্রীজের দুই কিলোমিটার ডাউনষ্ট্রিমে নদীর উপর পাইল ফাউন্ডেশনে প্লাটফর্ম থাকবে।

শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এবং ২০১৭ সালের ৭ অক্টোবর শরিয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টে ব্রীজের প্রথম স্প্যান স্থাপন করা হয়। বাংলাদেশিসহ বহু বিদেশি নাগরিক এই প্রকল্পে রাতদিন কাজ করছে।-বাসস

Back to top button